হাওজা নিউজ এজেন্সি: শত্রুরা যখন সরাসরি শক্তি প্রয়োগ বা চাপ দিয়ে ব্যর্থ হয়, তখন তারা কৌশল পরিবর্তন করে। চুক্তি, প্রতিশ্রুতি এবং মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে আস্থা অর্জন করে, নিকটবর্তী হয়ে পরোক্ষভাবে প্রতারণার জাল বুনে সমূলে ধ্বংসের চেষ্টা চালায়।
কিয়ামতের দিন শত্রুর মুখোশ উন্মোচন
সুরা ইবরাহিমের ২০–২৪ নম্বর আয়াতে দেখা যায়, দুর্বলরা অহংকারীদের বলবে: “আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম, আজ কি আমাদের শাস্তি কিছুটা হালকা করতে পারবে?”
কিন্তু তাদের নেতারা ঠান্ডা ভাষায় বলবে: “যদি আল্লাহ আমাদের হিদায়াত দিতেন, আমরাও তোমাদের হিদায়াত করতাম।”
এভাবেই শত্রুর আসল মুখ প্রকাশ পায়—দুনিয়াতে নেতৃত্বের ভান করা এরা আখিরাতে সব দায়িত্ব এড়িয়ে যায়।
দায়িত্ব অস্বীকার: শত্রুর পুরনো কৌশল
আরেকটি কৌশল হলো নির্লিপ্ততা। তারা বলবে: “চিৎকার করো বা ধৈর্য ধরো—কোনো ফল নেই।”
অর্থাৎ দুনিয়াতে যারা নেতৃত্বের দাবি করত, আখিরাতে তারা অনুসারীদের জন্য সামান্যতম সাহায্যও করতে পারবে না। আজকের মানুষকে এ থেকেই শিক্ষা নিতে হবে—যারা শত্রুর প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়, তাদের শেষ পরিণতিও হবে আফসোস ও লজ্জা।
শয়তানের স্বীকারোক্তি
আখিরাতে শয়তান নিজেই স্বীকার করবে: “আল্লাহ তোমাদের সত্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমি দিয়েছিলাম ভ্রান্ত প্রতিশ্রুতি। আমি তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের ওপর আমার কোনো জোর ছিল না, আমি শুধু ডাক দিয়েছি, আর তোমরা সাড়া দিয়েছ।”
অর্থাৎ শত্রুর প্রকৃত কোনো ক্ষমতা নেই। মানুষের অন্তর্গত দুর্বলতাই তাকে ফাঁদে ফেলে।
মানুষের ভেতরের দুর্বলতাই শত্রুর সুযোগ
শয়তান আরও জানাবে: “আমার কোনো ক্ষমতা ছিল না, কেবল আহ্বান করেছি।”
এখানেই লুকিয়ে আছে এক মনস্তাত্ত্বিক শিক্ষা—শত্রু তখনই জয়ী হয়, যখন লোভ, ভয়, অহংকার বা কামনা আমাদের ভেতরে সুযোগ দেয়। তাই আত্মপরিচয় ছাড়া শত্রু-পরিচয় অসম্পূর্ণ।
শত্রু-পরিচয়েউল্লেখিত আয়াতসমূহের মূল শিক্ষা
ভ্রান্ত প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা না দেওয়া– স্বাধীনতা বা উন্নতির নামে দাসত্ব চাপিয়ে দেওয়া আজকের শক্তিগুলোরও কৌশল।
শত্রু কখনো পাশে থাকে না__ আখিরাতে যেমন তারা সম্পর্ক ছিন্ন করবে, দুনিয়াতেও প্রকৃত বিপদে তারা কাউকে রক্ষা করে না।
শত্রুর প্রকৃত শক্তিহীনতা– তাদের হাতে কেবল ভ্রান্তি ও হুমকি।
বিপদে বুদ্ধিহীন আনুগত্যের ফল আফসোস– অন্ধ অনুসরণ মানুষকে ধ্বংস করে।
আল্লাহর প্রতিশ্রুতিতে ভরসা– মুক্তির একমাত্র পথ হলো ঈমান ও আল্লাহর সত্য প্রতিশ্রুতি।
সুরা ইবরাহিমের এই আয়াতগুলো স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়: শত্রু আসলে দুর্বল, তার শক্তি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও প্রতারণায়। তাই সচেতনতা ও ঈমানই মানুষের প্রকৃত রক্ষাকবচ। যে আল্লাহর সত্য প্রতিশ্রুতিতে ভরসা করে, শত্রুর কোনো চক্রান্তই তার ক্ষতি করতে পারে না।
আপনার কমেন্ট